Sunday 1 January 2012

তত্ত্বাবধায়কের বিকল্প ফর্মুলা বের করার পরামর্শ হাবিবুরের














ঢাকা, ৩১ ডিসেম্বর (আরটিএনএন ডটনেট)-- গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাদ দেওয়া হলে নতুন কোনো ফর্মুলা বের করার পরামর্শ দিয়েছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান।

শনিবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে এথিক্স ক্লাবের পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ পরামর্শ দেন।

হাবিবুর রহমান বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা কোনো মার্যাদাশীল রাষ্ট্রে থাকতে পারে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা তৈরি করে যেভাবে সুপ্রিম কোর্টকে ধ্বংস করা হয়েছে, এটা কোনো আত্মমর্যাদাশীল দেশ গ্রহণ করেত পারে না।

বিকল্প ফর্মূলা কি হতে হতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমার চেয়ে মেধাবী, ধুরন্ধর, ক্ষুরধার মেধা সম্পন্ন অনেক লোক এদেশে রয়েছেন, তারা অবশ্যই একটি উপায় বের করে ফেলবেন।’

অপর এক প্রশ্নের জবাবে হাবিবুর রহমান বলেন, নির্বাচন বিশ্বাসযোগ্য হতে হবে। তবে নির্বাচন বয়কট হবে বলে মনে করেন না তিনি।

এ সময় তত্ত্বাবধায়ক সরকার বহালের চেয়ে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করাই চ্যালেঞ্জ বলে মন্তব্য করেন সাবেক এই প্রধান বিচারপতি।

উল্লেখ্য, নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে ১৯৯৬ সালে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়। আর বর্তমান সরকার পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যেমে এটি বাতিল করে।

http://www.rtnn.net/details.php?id=41567&p=1&s=3

Tuesday 26 April 2011

বিচার বিভাগকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারে না জড়াতে পরামর্শ : সংবিধান সংশোধন কমিটির সঙ্গে মতবিনিময়ে বিশেষজ্ঞরা










এমরান হোসাইন

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার সঙ্গে বিচার বিভাগকে না জড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন সাবেক প্রধান বিচারপতি ও সংবিধান বিশেষজ্ঞরা। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা রক্ষা এবং এ বিভাগকে বিতর্কের ঊর্ধ্বে রাখতে তারা বিদায়ী প্রধান বিচারপতির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হওয়ার সুযোগ রদ করার পক্ষে জোরাল মত দেন। তাদের মতে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সঙ্গে বিচার বিভাগকে জড়ালে বিচারিক কাজ বাধাগ্রস্ত হবে এবং এ বিভাগে রাজনৈতিক রং লাগবে। বিচারপতিরা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হতে সরকারের আজ্ঞাবহ হয়ে কাজ করবেন। এদিকে বৈঠকে অংশ নেয়া সব বিচারপতি ও আইনজ্ঞরা বিচার বিভাগের জবাবদিহি ও বিচারপতিদের অভিশংসনের ক্ষমতা জাতীয় সংসদের হাতে না দিয়ে প্রচলিত সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলকে আরও শক্তিশালী ও কার্যকর করার প্রস্তাব দেন। অংশগ্রহণকারীদের অধিকাংশ রাষ্ট্রধর্মের বিপক্ষেও মত দেন।
গতকাল সংবিধান সংশোধনে গঠিত বিশেষ কমিটির সঙ্গে পৃথক বৈঠকে সাবেক বিচারপতি ও সংবিধান বিশেষজ্ঞরা এসব প্রস্তাবনা ও অভিমত তুলে ধরেন। বিশেষ কমিটির চেয়ারম্যান সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদ ভবনে সকাল ১১টা থেকে বিকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত দফায় দফায় অনুষ্ঠিত পৃথক বৈঠকে তিনজন সাবেক প্রধান বিচারপতি ও ১১ জন আইনজ্ঞ অংশ নেন। বৈঠকে ৫ জন সাবেক প্রধান বিচারপতিকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও এদের মধ্যে বিচারপতি মোস্তাফা কামাল, বিচারপতি তাফাজ্জাল ইসলাম ও বিচারপতি মোহাম্মদ ফজলুল করিম অংশ নেন। বাকি দু’জন বিচারপতি কামালউদ্দিন হোসেন, বিচারপতি মুহম্মদ হাবিবুর রহমান অংশ নেননি। প্রসঙ্গত, সাবেক বিচারপতিদের মধ্যে বর্তমানে ১৩ জন জীবিত থাকলেও তাদের মধ্যে ৮ জনকেই বিশেষ কমিটি সংলাপের জন্য ডাকেনি। যেসব প্রধান বিচারপতিকে ডাকা হয়নি তারা হলেন, সাবেক প্রধান বিচারপতি ও অস্থায়ী সরকার প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ, বিচারপতি এটিএম আফজাল হোসেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক প্রধান উপদেষ্টা বিচারপতি লতিফুর রহমান, বিচারপতি মাহমুদুল আমিন চৌধুরী, বিচারপতি কেএম হাসান, বিচারপতি সৈয়দ জে আর মোদাচ্ছের হোসেন, বিচারপতি এম রুহুল আমিন ও বিচারপতি এমএম রুহুল আমিন। বৈঠকে অংশ নেয়া আইন বিশেষজ্ঞদের মধ্যে রয়েছেন ছিলেন সৈয়দ আমীরুল ইসলাম, ড. কামাল হোসেন, ব্যারিস্টার এম আমীরুল ইসলাম, ড. এম জহির, সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার রফিক-উল হক, সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল মাহমুদুল ইসলাম, আজমালুল হোসেন কিউসি, অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, তৌফিক নেওয়াজ, ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস ও ড. মো. শাহ আলম। আমন্ত্রিত আইন বিশেষজ্ঞদের মধ্যে ব্যারিস্টার রোকনউদ্দিন মাহমুদ ও টিএইচ খান বৈঠকে অংশ নেননি।
বৈঠকে বিশেষ কমিটির সদস্যদের মধ্যে কমিটির কো-চেয়ারম্যান সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, আমির হোসেন আমু, আবদুর রাজ্জাক, তোফায়েল আহমেদ, রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, আবদুল মতিন খসরু, ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, অ্যাডভোকেট শিরিন শারমীন চৌধুরী, ড. হাছান মাহমুদ, অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়া অংশ নেন।
বিশেষ কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গতকাল প্রথম দিন বিচারপতি ও আইনজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। গতকাল তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা, রাষ্ট্রধর্ম, সুপ্রিমকোর্টের জবাবদিহি, সংবিধানের মৌলিক বিষয় ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা হয়। সকাল ১১টায় সংসদ ভবনের দ্বিতীয়তলার কেবিনেট কক্ষে এ বৈঠকের শুরুতেই মতামত দেন বিচারপতি মোস্তাফা কামাল। এরপর পর্যায়ক্রমে অন্যরা তাদের অভিমত তুলে ধরেন।
আজ সংলাপের দ্বিতীয় দিন সকালে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল এবং বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) সংলাপে অংশ নেয়ার কথা থাকলেও বিএনপি ও তার মিত্ররা সংলাপে যাচ্ছে না। এদিকে আজ বিকালে এরশাদের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টি, জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টির সঙ্গে বিশেষ কমিটি সংলাপ করবে। এছাড়া আগামীকাল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করবে তারা।
গতকালের বৈঠকের পর বিশেষ কমিটির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো ব্রিফিং করা হয়নি। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক শেষ করে আগামীকাল আনুষ্ঠানিক ব্রিফিং করা হবে বলে কমিটির কো-চেয়ারম্যান ও মুখপাত্র সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত জানিয়েছেন।
তবে কমিটির সদস্য আবদুর রাজ্জাক, তোফায়েল আহমেদ, অ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরু, হাসানুল হক ইনু ও রাশেদ খান মেনন আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে দাবি করে বলেন, অংশগ্রহণকারীরা খোলামেলা আলোচনা করেছেন। তাদের মতামতের ভিত্তিতে কমিটিতে এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হয়নি।
এদিকে বিচারপতি ও আইনজ্ঞদের মতামত প্রসঙ্গে ব্যারিস্টার আমীর-উল-ইসলাম বলেন, অধিকাংশ মতামত প্রদানকারী তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সঙ্গে বিচার বিভাগকে না জড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন। অনেকেই বলেছেন, বিদায়ী প্রধান বিচারপতির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হওয়ার সুযোগ থাকা উচিত নয়। কারণ এই সুযোগই বিচার বিভাগে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, বৈঠকে বিচারকদের অভিশংসনের ক্ষমতা সংসদের হাতে না দেয়া এবং সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলকে আরও শক্তিশালী করার পক্ষেই মতামত এসেছে।
এক প্রশ্নের জবাবে ব্যারিস্টার আমীর তার নিজের প্রস্তাবনার কথা তুলে ধরে বলেন, তিনি রাষ্ট্রধর্ম না রাখার কথা বলেছেন। তার মতে, রাষ্ট্রের কোনো ধর্ম থাকতে পারে না।
বিচারপতিদের সরকারের আজ্ঞাবহ রাখার মানে হয় না : বিচারপতিদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান পদে নিয়োগের বিধান বাতিলের পরামর্শ দিয়েছেন সাবেক প্রধান বিচারপতি মোস্তফা কামাল। তিনি বলেন, প্রধান বিচারপতি বা ভাবী প্রধান বিচারপতির সামনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হওয়ার মুলো ঝুলিয়ে রেখে তাদের সরকারের আজ্ঞাবহ করে রাখার কোনো মানে হয় না। এ বিধান স্বাধীন বিচার বিভাগের জন্য অন্তরায় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বিশেষ কমিটির সঙ্গে সংলাপে বিচারপতি মোস্তফা কামাল বিচারকদের অভিশংসনের ক্ষমতা জাতীয় সংসদের হাতে দেয়ার পরিবর্তে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলকে শক্তিশালী করার কথা বলেন। একইসঙ্গে তিনি রাষ্ট্রধর্ম ইস্যুতে সংবিধানকে কোনো ‘ইজম’-এর মধ্যে ঢুকিয়ে না ফেলার পক্ষে মত দেন।
বিশেষ কমিটির সঙ্গে সংলাপের শুরুতেই নিজের বক্তব্য দিতে গিয়ে বিচারপতি মোস্তাফা কামাল বলেন, বিচারপতিদের অভিশংসনের ক্ষমতা সংসদের হাতে এলে সংসদ সদস্যরা গৌরবান্বিত বোধ করতে পারেন। কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছুই হবে না। এক্ষেত্রে তিনি প্রচলিত সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলকে আরও কার্যকর ও শক্তিশালী করার পরামর্শ দেন। সাবেক এই প্রধান বিচারপতি তার প্রস্তাবের পক্ষে যুক্তি দিতে গিয়ে প্রশ্ন রাখেন, বিসিএস ক্যাডারের কোনো কর্মকর্তার অপরাধ যদি সিনিয়র কোনো অফিসার তদন্ত করতে পারে, তাহলে বিচারকদের ক্ষেত্রে কেন সেটি করা সম্ভব হবে না? তিনি বলেন, সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের যাতে নিজস্ব তদন্ত সংস্থা থাকতে পারে সে বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে। কোনো বিচারপতির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে যাতে ওই তদন্ত সংস্থা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য-প্রমাণ হাজির করতে পারে সে বিষয়ে তাদের কাজ করতে দিতে হবে।
তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার পদ থেকে বিচারপতিদের রেহাই দেয়ার প্রস্তাব রেখে বলেন, প্রধান বিচারপতি বা ভাবী প্রধান বিচারপতির সামনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হওয়ার মুলো ঝুলিয়ে রেখে তাদের সরকারের আজ্ঞাবহ করে রাখার কোনো মানে হয় না। সেটি স্বাধীন বিচার বিভাগের সঙ্গে সঙ্গতিহীন হবে। এক্ষেত্রে সবার সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে দেশের অন্য কোনো গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিকে এই পদে নিয়োগ দেয়ার বিধান করা যেতে পারে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, সুযোগ থাকলে বিচারপতিদের মধ্যে যে অভিলাষ তৈরি হয়, তা বিচার বিভাগের জন্য বাঞ্ছনীয় নয়। এক্ষেত্রে বিচার বিভাগে রাজনৈতিক রং লাগে এবং বিচারপতিরা বিব্রত হন। তিনি বলেন, এখানে ভালো কাজ করলেও খারাপ। আবার খারাপ কাজ করলেও খারাপ। নির্বাচনে যারা পরাজিত হন তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হিসেবে সাবেক প্রধান বিচারপতির নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। এ বিষয়গুলো বিচার বিভাগের জন্য কল্যাণকর কিছু নয়।
রাষ্ট্রধর্ম সম্পর্কে তিনি বলেন, আমি বলেছি, শাসনতন্ত্রে কোনো ইজম আনবেন না। কৌশলে কোনো (রাজনৈতিক) মতামত চাপিয়ে দেবেন না। এটা করলে তা সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। ইন্দোনেশিয়াসহ কয়েকটি দেশের নাম করে তিনি বলেন, যেসব দেশের সংবিধানে ওই সব তন্ত্র ঢোকানো হয়েছে, সেগুলো শেষ পর্যন্ত টেকেনি।
সংবিধান সংশোধনে কমিশন গঠন করতে হবে : সংবিধান সংশোধনে আবারও কমিশন গঠনের প্রস্তাব দিয়েছেন দেশের প্রথম সংবিধান প্রণয়ন কমিটির প্রধান ও প্রখ্যাত আইনজীবী ড. কামাল হোসেন। গতকাল বিশেষ কমিটির কাছে মতামত প্রকাশকালে তিনি বলেন, কোনো ধরনের বিতর্ক সৃষ্টি না করে ঐকমত্যের ভিত্তিতে সংবিধান সংশোধন করতে হবে। তার মতে, জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে সংবিধান সংশোধন করতে পারলে সেটি হবে সর্বোত্তম কাজ।
বিশেষ কমিটির কাছে তার দেয়া লিখিত বক্তব্যে কমিশন গঠনের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে ড. কামাল বলেন, সংবিধানের মূল কাঠামো বদলাতে হলে তা দেশের ১৬ কোটি মানুষকে আমলে নিয়ে করা বাঞ্ছনীয়। এক্ষেত্রে একটি কমিশন গঠন করা যেতে পারে যেখানে জনগণের মতামত নেয়ার একটি নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া অবলম্বন করা হবে।
তিনি বলেন, সংবিধানেই সংবিধান সংশোধনের পথ ও পদ্ধতি বলে দেয়া আছে। উচ্চ আদালত যেভাবে রায় দিয়েছেন, তার বাইরে গিয়েও কমিটির খুব বেশি করা উচিত নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
পরে ড. কামাল হোসেন সংলাপ থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ’৭২-এ যে ঐক্য নিয়ে সংবিধান প্রণয়ন করেছিলাম, তা আরও সুদৃঢ় করার কথা বলেছি। কারণ সংবিধান সংশোধন নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি কারও কাম্য নয়। তিনি বলেন, বিভিন্ন সময়ে আমাদের সংবিধানের সেই মূল চেতনা আঘাতপ্রাপ্ত হলেও বিচার বিভাগ ও আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা তা ফিরে পেয়েছি। তাই এখন ঠিক যতটুকু দরকার, ততটুকু সংশোধনেই হাত দেয়া উচিত।
রাষ্ট্রধর্ম বিষয়ে তিনি বলেন, রাষ্ট্রের কোনো ধর্ম নেই। জনগণের ধর্মই রাষ্ট্রের ধর্ম। রাষ্ট্রধর্ম নিয়ে কোনো বিতর্ক তৈরি হোক—সেটা চাই না।
ড. কামাল হোসেন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার পক্ষে মত দিয়ে বলেন, অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে এর কোনো বিকল্প নেই। প্রধান বিচারপতিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অন্য পেশার মানুষ সম্পর্কে ঐকমত্য না হওয়ার কারণে প্রধান বিচারপতিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান করা হয়েছিল। এখন এসব বিষয়ে আদালত যে রায় দিয়েছেন, তা ঠিক রেখে যতদূর সম্ভব ঐকমত্যে পৌঁছাতে হবে। বিচারপতিকে অভিশংসনের ব্যাপারে সংসদ যে ক্ষমতা চেয়েছে, তার বিপক্ষে মত দিয়ে ড. কামাল বলেন, আমি সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের বর্তমান ক্ষমতাকে সমর্থন দিয়েছি।
তাত্ক্ষণিকভাবে কমিটির কোনো সদস্য সংবিধান সংশোধনে কমিশন গঠনের প্রস্তাবের কিছু না বললেও পরে কমিটির সদস্যরা বলেন, কমিশন গঠন করার কোনো সাংবিধানিক সুযোগ নেই। এর আগেও ড. কামাল কমিশন গঠনের প্রস্তাব দিলে বিশেষ কমিটির কো-চেয়ারম্যান সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত তার কড়া সমালোচনা করেন। গত ১২ এপ্রিল এক সংবাদ সম্মেলনে কমিশন গঠনের বিরোধিতা করে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, সংবিধান সংশোধনের জন্য কমিশন গঠনের কোনো সাংবিধানিক স্বীকৃতি নেই।
পলিটিক্যালি ভিক্টিমাইজের আশঙ্কা থাকবে : সংলাপে বিশিষ্ট আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক-উল হক তত্ত্বাবধায়ক সরকার রাখার পক্ষে মত দিয়েছেন। তবে তিনিও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সঙ্গে বিচার বিভাগকে না জড়ানোর পরামর্শ দেন। ব্যারিস্টার রফিক রাষ্ট্রধর্ম না রাখার পক্ষে মত দেন। তার মতে, রাষ্ট্রের কোনো ধর্ম থাকতে পারে না। ধর্ম হচ্ছে মানুষের বিশ্বাস।
এদিকে সংলাপ থেকে বেরিয়ে ব্যারিস্টার রফিক-উল হক বলেন, বিচারকদের ইমপিচমেন্টের (অভিশংসনের) ক্ষমতা সংসদে দেয়া হলে পলিটিক্যালি ভিক্টিমাইজড (রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার) হওয়ার আশঙ্কা থেকে যাবে।
দু’দলের সমসংখ্যক সদস্য নিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার : সংলাপে সিনিয়র আইনজীবী ড. এম জহির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নতুন ফর্মুলা দিয়েছেন। তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার পদ বিলোপ করে ওই সময়কালে রাষ্ট্রপতি দেশের প্রধান নির্বাহী থাকবেন বলে প্রস্তাব দেন। জহির তার ফর্মুলায় সরকার এবং বিরোধী দল থেকে সমসংখ্যক সদস্য নিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের প্রস্তাব দেন। বিশেষ কমিটির কাছে নিজের মতামত জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতির অধীনে দুটি প্রধান রাজনৈতিক দল থেকে পাঁচজন করে মোট ১০ জনের কাউন্সিল তৈরি করা হবে এবং রাষ্ট্রপতি এই কাউন্সিলের মাধ্যমে রাষ্ট্র পরিচালনা করবেন। এতে নির্দলীয় সরকারের বদলে দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার হবে এবং বিতর্ক বন্ধ হবে। এম জাহির প্রস্তাবিত পদ্ধতির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ হবে এক মাস থেকে ছয় সপ্তাহ। এ সময়ে নির্বাচন কমিশনের পরামর্শে রাষ্ট্রপতি সব ধরনের সিদ্ধান্ত নেবেন বলে তিনি প্রস্তাব করেন। তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলুপ্ত করার পক্ষেও অভিমত ব্যক্ত করেন। বিচারপতিদের সংসদে জবাবদিহিতা ও অভিশংসনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে তিনি এ বিষয়ে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলকে কার্যকর ও সক্রিয় করার পক্ষে মত দেন।

Thursday 25 March 2010

poster



Campaigns: the 1978 poster that helped Thatcher to power. Left, Saatchis’ 1992 poster and, right, the 1997 ‘Demon Eyes’ image

http://www.thisislondon.co.uk/standard/article-23819022-david-cameron-calls-in-saatchis-as-tory-lead-vanishes.do